বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি (নতুন সংস্করণ)

কারক

নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি (নতুন সংস্করণ) - NCTB BOOK

মূলত ক্রিয়ার সঙ্গে বাক্যের বিশেষ্য ও সর্বনামের যে সম্পর্ক, তাকে কারক বলে। কারক সম্পর্ক বোঝাতে বিশেষ্য ও সর্বনামের সঙ্গে সাধারণত বিভক্তি ও অনুসর্গ যুক্ত হয়ে থাকে।

কারক ছয় প্রকার: কর্তা কারক, কর্ম কারক, করণ কারক, অপাদান কারক, অধিকরণ কারক ও সম্বন্ধ কারক।

কর্তা কারক

ক্রিয়া যার দ্বারা সম্পাদিত হয়, তাকে কর্তাকারক বলে। বাক্যের কর্তা বা উদ্দেশ্যই কর্তা কারক। কর্তা কারকে সাধারণত বিভক্তি যুক্ত হয় না। যেমন-

আমরা নদীর ঘাট থেকে রিকশা নিয়েছিলাম।

অনেকগুলো বন্য হাতি বাগান নষ্ট করে দিল।

কর্তা কারকে কখনো কখনো -এ বিভক্তি যুক্ত হয়। যেমন -

পাগলে কিনা বলে, ছাগলে কিনা খায়।

কর্ম কারক

যাকে আশ্রয় করে কর্তা ক্রিয়া সম্পাদন করে, তাকে কর্ম কারক বলে। বাক্যের মুখ্য কর্ম ও গৌণ কর্ম – উভয় - ধরনের কর্মই কর্ম কারক হিসেবে গণ্য হয়। সাধারণত মুখ্য কর্ম কারকে বিভক্তি হয় না, তবে গৌণ কর্ম কারকে '-কে' বিভক্তি হয়। যেমন-

সে রোজ সকালে এক প্লেট ভাত খায়। 

শিক্ষককে জানাও। 

অসহায়কে সাহায্য করো। 

রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন সমাজের নানা রকম অন্ধতা, গোঁড়ামি, ও কুসংস্কারকে তীব্র ভাষায় সমালোচনা করে গেছেন।

চাষিরা ধারালো কাস্তে দিয়ে ধান কাটছে।

অপাদান কারক

যে কারকে ক্রিয়ার উৎস নির্দেশ করা হয়, তাকে অপাদান কারক বলে। এই কারকে সাধারণত 'হতে', 'থেকে' ইত্যাদি অনুসর্গ শব্দের পরে বসে। যেমন- 

জমি থেকে ফসল পাই। 

কাপটা উঁচু টেবিল থেকে পড়ে ভেঙে গেল।

অধিকরণ কারক

যে কারকে স্থান, কাল, বিষয় ও ভাব নির্দেশিত হয়, তাকে অধিকরণ কারক বলে। এই কারকে সাধারণত '-এ', '-য়', '-য়ে', '-তে' ইত্যাদি বিভক্তি শব্দের সঙ্গে যুক্ত হয়। যেমন- 

বাবা বাড়িতে আছেন। 

বিকাল পাঁচটায় অফিস ছুটি হবে। 

রাজীব বাংলা ব্যাকরণে ভালো।

সম্বন্ধ কারক

যে কারকে বিশেষ্য ও সর্বনামের সঙ্গে বিশেষ্য ও সর্বনামের সম্পর্ক নির্দেশিত হয়, তাকে সম্বন্ধ কারক বলে। এই কারকে ক্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক পরোক্ষ। এই কারকে শব্দের সঙ্গে 'র', -এর', '-য়ের', '-কার', '-কের' ইত্যাদি বিভক্তি যুক্ত হয়। যেমন-

ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না। 

আমার জামার বোতামগুলো একটু অন্য রকম। 

তখনকার দিনে পায়ে হেঁটে চলতে হতো মাইলের পর মাইল।

Content added By
শব্দটিকে ভাঙা
বিশেষ্যকে প্রশ্ন করা
বিশেষণকে প্রশ্ন করা
ক্রিয়াকে প্রশ্ন করা
শিক্ষক ছাত্রদের ব্যাকরণ পড়াচ্ছেন
ছেলেরা ফুটবল খেলছে
রাখাল গরুকে ঘাস খাওয়ায়
বাঘ-মহিষে এক ঘাটে জল খায়
মা শিশুকে চাঁদ দেখাচ্ছেন
বাঘে-মহিষে একঘাটে জল খায়
রাখাল গরুর পাল লয়ে যায় মাঠে
তোমাকে পড়াতে হবে
কর্তৃকারকে দ্বিতীয়া
কর্মকারকে দ্বিতীয়া
করণ কারকে তৃতীয়া
অপাদান কারকে পঞ্চমী
কর্তা কারকে দ্বিতীয়া
কর্ম কারকে ৫মী
কর্ম কারকে দ্বিতীয়া
অপাদানে দ্বিতীয়
কর্ম কারকে দ্বিতীয়া
কর্তা কারকে দ্বিতীয়া
করণ কারকে দ্বিতীয়া
অপাদান কারকে দ্বিতীয়া
আমারো পরানে যাহা চায়।
আমারে তুমি করিবে ত্রাণ ।
আমার সারা দেহ খেও গো মাটি
আমার সকল দুঃখের প্রদীপ।
তাকে আমরা চিনি না
জিজ্ঞাসিব জনে জনে
লাঙল দ্বারা জমি চাষ করা হয়।
দুধকে আমরা দুগ্ধ বলি
'তাস' খেলে পড়া নষ্ট করো না
'লাঠি' খেলা ভালো নয়
'কানামাছি' খেলবি কে কে
ছেলেটি 'ফুটবল' ভালো খেলে
ছেলেটা কথা শোনে
এখন গোল্লায় যাও
খোকাকে কাঁদিও না
বেশ এক ঘুম ঘুমিয়েছি
আমি স্কুলে যাচ্ছি
তাড়াতাড়ি রিক্সা ডাকো
ছেলেরা মাঠে বল খেলে
সে রাঙ্গামাটি যাবে
পরীক্ষায় 'নকল' করা ভালো নয়
'ফুল' তুলতে এলেম বনে
পাখিকে 'ঢিল' মারলে কেন
'রাত' শেষ হয়ে এল
মেয়েটির চুলে 'লাল ফিতা' বাঁধা
ঠাণ্ডা 'জলে' বাষ্প হয় না
আকাশ 'মেঘে' আচ্ছন্ন
'দুঃখে' যেন করতে পারি জয়
এ কলমে কালি নাই
এ কলমের দাম বেশি
এ কলমে ভালো লেখা হয় না
এ কলমটি কাল থেকে খুঁজছি
মেয়েটির চুল 'লাল ফিতা' বাঁধা
ঠান্ডা 'জলে' বাষ্প হয় না
শিকারি বিড়াল 'গোঁফে' চেনা যায়
'দুঃখ' যেন করিতে পারি জয়
কর্মকারকে সপ্তমী বিভক্তি
অপাদান কারকে সপ্তমী বিভক্তি
করণ কারকে সপ্তমী বিভক্তি
অধিকরণ কারকে সপ্তমী বিভক্তি
'তিলে' তৈল আছে
'ফুলে ফুলে' ঘর ভরেছে
'শুক্তি' থেকে মুক্তো মেলে
'বাড়ি থেকে' নদী দেখা যায়
জমি থেকে ফসল পাই
দুধ থেকে দই হয়
মেঘ থেকে বৃষ্টি হয়
শুক্তি থেকে মুক্তো মেলে
'বাবাকে' বড্ড ভয় পাই
'বোঁটা আলগা' ফল গাছে থাকে না
'লোক মুখে' শুনেছি
যেখানে 'বাঘের ভয়' সেখানে রাত হয়
'বাবাকে' ভয়ের কিছু নেই
'বোঁটা আলগা' ফল গাছে থাকে না
'লোকমুখে' শুনেছি
যেখানে 'বাঘের' ভয়, সেখানে সন্ধ্যে হয়
'সবুজ ঘাসে' ছেয়ে গেছে মাঠ
'পাখিতে' বাসা বেঁধেছে
এই 'মেঘে' বৃষ্টি হবে
'নদীতে' অনেক ঢেউ
ঘোড়াকে 'চাবুক' মার।
আমি কি ডরাই সখি ভিখারি 'রাঘবে'?
এ 'দেহে' প্রাণ নেই ।
'পাগলে' কী না বলে ।
কোন বনেতে ফুটল যে ফুল
পরাজয়ে ডরে না বীর
সর্বশিষ্যে জ্ঞান দেন গুরু মহাশয়ে
শরতে ধরাতল শিশিরে ঝলমল
কর্তায় ৭মী বিভক্তি
করণে ৭মী বিভক্তি
সম্প্রদানে ৭মী বিভক্তি
অধিকরণে ৭মী বিভক্তি
তিলে তৈল আছে
রাকিব অঙ্কে কাঁচা
পুকুরে মাছ আছে
নদীতে পানি আছে
ঐকদেশিক অধিকরণ
বৈষয়িক অধিকরণ
অভিব্যাপক অধিকরণ
কালাধিকরণ
সব 'ঝিনুকে' মুক্তা নেই
'গগনে' গরজে মেঘ ঘন বরষা
'কূলে' একা বসে আছি
'আজকে' তোমায় দেখতে এলেম
বিশেষ্যের পূর্বে
বিশেষ্যের পরে
বিশেষণের পূর্বে
বিশেষণের পরে
জ্ঞানের আলোক
নজরুলের 'অগ্নিবীণা'
মাথার চুল
গাছের ফল
অভেদ সম্বন্ধ
অধিকার সম্বন্ধ
জন্ম-জনক সম্বন্ধ
হেতু সম্বন্ধ
ফুলে ফলে বাগান ভরেছে
তাকে গ্রামে যেতে হয়
আমাদের পাড়ার সুজিত কবিতা লেখে
সূর্যাস্তে চারদিক অন্ধকারে আবৃত হয়

সঠিক উত্তরে টিক চিহ্ন (✓) দাও। 

১. বাক্যে ক্রিয়ার সঙ্গে কোন পদের সম্পর্ককে কারক বলে? 

ক. বিশেষ্য ও বিশেষণ খ. বিশেষ্য ও সর্বনাম 

গ. বিশেষ্য ও অনুসর্গ ঘ. বিশেষণ ও আবেগ 

২. ক্রিয়ার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক নেই, তেমন কারকের নাম কী? 

ক. সম্বন্ধ খ. অপাদান গ. অধিকরণ ঘ. কর্তা 

৩. বাংলা ভাষায় কারকের সংখ্যা কয়টি? 

ক. তিন খ. চার গ. পাঁচ ঘ. ছয় 

৪. 'আমরা নদীর ঘাট থেকে রিকশা নিয়েছিলাম' বাক্যটিতে আমরা কোন কারক?

ক. কর্তা খ. কর্ম গ. করণ ঘ. অপাদান 

৫. যাকে আশ্রয় করে কর্তা ক্রিয়া সম্পাদন করে তাকে কোন কারক বলে? 

ক. কর্তা খ. কর্ম গ. অধিকরণ ঘ. অপাদান 

৬. 'শিক্ষককে জানাও'- এই বাক্যে 'শিক্ষককে' কোন কারক? 

ক. অধিকরণ খ. অপাদান গ. কর্তা ঘ. কর্ম

৭. 'ভেড়া দিয়ে চাষ করা সম্ভব নয়' এই বাক্যে 'ভেড়া দিয়ে' কোন কারক? 

ক. সম্বন্ধ খ. কর্ম গ. করণ ঘ. কর্তা

৮. 'জমি থেকে ফসল পাই' বাক্যটিতে 'জমি থেকে' কোন কারক? 

ক. করণ খ. কর্ম গ. অপাদান ঘ. অধিকরণ 

৯. কোন কারকে মূলত ক্রিয়ার স্থান, সময় ইত্যাদি বোঝায়? 

ক. অপাদান খ. অধিকরণ গ. সম্বন্ধ ঘ. কর্ম 

১০. 'গাছের ফল পেকেছে' এখানে কোন বিভক্তির প্রয়োগ হয়েছে? 

ক.-র খ. -এর গ. -য়ের ঘ. -এ

Content added By

আরও দেখুন...

Promotion